খেটে খাওয়া মানুষটির মুখে অকৃত্রিম হাসি

রাত পোহালে দিন। খেটে খাওয়া মানুষগুলো এইভাবে জীবনের সাথে লড়াই করে আসছে। এই মানুষগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, তারা কত পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়ে নিজের এবং পরিবারের জন্য জীবিকা নির্বাহ করছে।


আমাদের সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ বা ধনী, কেউবা মধ্যবিত্ত আবার কেউবা অত্যান্ত গরিব। আর এইসব মানুষগুলো নিয়েই হয় একটি সমাজ। আর সমাজে বসবাস করতে গেলে একে অপরের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। যাইহোক, আসল কথায় আসি এই গল্পটা শুধু খেটে খাওয়া মানুষের উপর ভিত্তি করে। সমাজের ধনী মানুষগুলো গরিব মানুষদের অবহেলা করে। তাদের মনে একটাই ভাবনা জাগে গরিবেরা মানুষ না। ধনী মানুষ গুলো সব সময় গরিব মানুষকে অবহেলার চোখে দেখে। গরিবের প্রতি অত্যাচার অপমান করা তাদের একটা স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা সব সময় গরিব কে কষ্টে রাখে, যেন তারা কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।

গরিব মানুষ গুলো দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার জন্য প্রচুর কষ্ট ও পরিশ্রমের কাজ করে। যখন সেই গরীব মানুষটি ধনী মানুষের বাড়িতে কাজ করতে যাই। আর তখন ধনী মানুষের মাথায় অনেক কু-বুদ্ধি আসে। আজ তাদেরকে অপমান করার একটা সুযোগ বের হলো। সেই গরীব মানুষ গুলো সারাদিন কষ্ট করে কাজ করে, তাদের মন যোগাতে পারে না । একটু কাজের ভুল হলে তাদেরকে অপমানের শিকার ও শাস্তি পেতে হয়। এটাই কি সেই ধনী মানুষের বৈষম্য চরিত্র?

সকাল থেকে কষ্ট করে, রোদে ঘাম ঝরিয়ে কাজ করে, এই অকৃত্রিম খেটে খাওয়া মানুষগুলো। দুপুরের খাবারের জন্য সমাজের মধ্যে ধনী মানুষ বাড়িতে যাওয়া হয় । তখন তারা কত রকমের অজুহাত করে। যেমন, তোমার এই কাজ হয়নি, ওই কাজ হয়নি, কেন সময়ের মধ্যে আসলে না ইত্যাদি। এমনকি তাদের মনে একটা ক্ষোভ আছে, যে তারা অনেক খাবার খেতে এসেছে ! তাদের বাড়িতে মাছ মাংস রান্না হলেও কাজের মানুষের পাতে জোটে ডাল-ভাত এবং আলুর ভাজি। তবুও গরিব মানুষের ডাল ভাত ও আলুর ভাজি খেয়ে কাজে যেতে হয়। কারণ তারা যে গরিব , তাদের যে কত কষ্ট সহ্য করে কাজ করে সংসার চালাতে হয় সেই ধনী মানুষগুলো তো জানেনা। তাদের ওপর ভরসা করে থাকে তাদের ছেলেমেয়েরা এই ভেবে, আজ পেট ভরে ডাল ভাত খেতে পারবে। আর সেই জন্য গরিব মানুষ কষ্ট সহ্য করে কাজে লেগে পড়ে।

রোদের দিনে কাজ করার সময় অনেক কষ্ট হয়। সেই জন্য আরামের-আইসের প্রয়োজন হয়। সেই আরাম-আয়েস গুলো ধনী ব্যক্তিরা সহ্য করতে পারে না। এমনকি তাদের রাগ হলে, টাকা দেওয়ার সময় বলে, কাজের সময় তো আরাম-আয়েশের কোন কথা ছিল না। তখন গরিব মানুষগুলো কিছু না বলেই সেই প্রচন্ড রোদের মাঝে কাজ করতে যায়। এইসব কথাবার্তা বলে অসহায় নিরুপায় গরীব মানুষগুলোকে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গরুর মত খাটিয়ে সন্ধ্যা বেলা বলে যাও, বাড়ি যাও। কাজ তো হলোই না। সারাদিন কাজ করে তাদের মন ভরাতে পারেনা। এই খেটে খাওয়া গরিব মানুষগুলো কষ্ট করে কাজ শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাড়ি ফিরে গোসল করে টাকা নিতে যাই।

আমাদের পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণিত আছে যে "শ্রমিকের মাথার ঘাম পায়ে পরার আগেই কাজের ন্যায্য মূল্য দিতে হবে"। কিন্তু আমাদের সমাজের কিছু ধনী মানুষ আছে। যারা এসব কথা মানে না, যে কাজ শেষে টাকা সেই রাতেই দিতে হয়। টাকা নেওয়ার সময় অনেক কথা শুনতে হয় এই শ্রমিক গুলোকে। গরিবের মানুষ সব কষ্ট সহ্য করে টাকা নিয়ে বাজারে গিয়ে খরচ করে। তাদের ছেলেমেয়েদের মুখে দু'বেলা খাবার তুলে দেয়। তাই এই খেটে খাওয়া অকৃত্রিম হাসি গরিব মানুষের মুখেই শোভা পায়।

গরিব মানুষের প্রতিটি দিন কাটে এইভাবে। ধনীদের অত্যাচার মেনে নিতে হয় কারণ তারা কাজ না করলে তাদের ছেলেমেয়েদের মুখে দুইবেলা ভাত তুলে দিতে পারবে না। কিন্তু আমাদের উচিত ধনী গরিবের সব ভেদাভেদ ভুলে তাদেরকে মানুষ বলে গণ্য করা। কারণ তারাও মানুষ, তাদেরও জীবন আছে এবং তারাও সমাজের মধ্যে বসবাস করে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের ইচ্ছা হয় একবালা মাছ মাংস খেতে। কিন্তু তাদের কে সবাই হেয় চোখে দেখে। তাদের উপর অত্যাচার জুলুম করে থাকে।

যেদিন এই রকম অন্যায় অত্যাচার বন্ধ হবে। আমরা সেই দিনই একটি ভালো সমাজ পাব এবং মানুষে মানুষে সম্প্রতি তৈরি করতে সক্ষম হব । আজকে এখানেই শেষ করলাম, পরবর্তীতে "খেটে খাওয়া মানুষটির মুখে অকৃত্রিম হাসি" পোস্টটি নিয়ে আলোচনা করব।

ধন্যবাদ

www.sasonlinetv.com